সময় ঠিক হলো সন্ধ্যা সাতটায়। আমার একটা কাজে ইউনিভার্সিটিতে যেতে হয়েছে। বাসের লাইনে দাঁড়িয়ে শীতের শুভ্রতার পরশে রোমাঞ্চিত আমি ! সারিবদ্ধভাবে অসংখ্য বুটের ছাপের দাগ পড়ে আছে বরফের চাদরে ঢাকা রাস্তায়। আগের ছাত্র- ছাত্রীরা লাইনে দাঁড়ানো দেখে স্কুল জীবনের পিটি ক্লাসের কথা মনে যাচ্ছে। পার্থক্য এই যে, ওখানে দাঁড়াতে হতো কাঠফাটা রোদের নিচে আর এখানে ঠিক তার বিপরীত! সূর্যদেবের অপার অার্শীবাদে কড়া রোদে পুড়ে মাথা চুয়ে ঘামের ফোটা মাটিতে পড়তো টপ টপ করে আর এখানে মহেশ্বরের কৃপায় হিমালয়ের আভাস পেতে পেতে হিম ঠান্ডায় জমে বরফ হয়ে যাচ্ছি! ফেরার পথে বাসে উঠে বসে ভাবছি, ও কোথায়? ফোন দেওয়ার কথা ভাবতে ভাবতেই জ্যাকেটের পকেটে হাত রাখা মাত্রই মুঠোফোন বেজে উঠলো। ওর ট্যালিপ্যাথির জোর আছে। কেন এমন বলছি ? যখনই ভাবছি কল করবো তখনই যদি সে ই ব্যাক্তির কল চলে আসে, এটাকে বলে ট্যালিপ্যাথি! আজ এ নিয়ে নয়বার এমন হল। এত স্বল্প সময়ে অন্য কারও সাথে এমন হয়েছে বলে মনে হয় না।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা। টিম হর্টনস – গ্র্যান্ডলেক রোড।
আজকে পৌঁছে যে টেবিলে বসলাম, ওখানে গুড়ি গুড়ি খাবারের দানা পড়ে আছে। টিস্যু ন্যাপকিন খুঁজতে লাগলাম। ও এসবের ধার ধারে না, পাশের চেয়ারে ব্যাগ রেখে বসে পড়লো। টেবিল পরিষ্কার করে জ্যাকেট খুলে চেয়ারে বসতেই আমার নীল টি শার্টের দিকে চোখ ওর। বেশ আবদার করে বললো, অমন টি শার্ট চাই! এটা ইউনিভার্সিটি থেকে দিয়েছে। অফিসিয়াল টি শার্ট। বিভিন্ন দিনে ভিন্ন ভিন্ন উপলক্ষকে সামনে রেখে টি শার্টের প্রচলনটা তেমন নতুন কিছু না!! তাই আরেকটা জোগাড় করা প্রায় অসম্ভবের পর্যায়েই পড়ে। যারা অফিসে কাজ করে এগুলো শুধু তাদের জন্যই। যার সোজাসাপ্তা মানে হল এমন আরেকটা টি শার্টের দেখা পেতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী বছর পর্যন্ত। কথা বলার এক পর্যায়ে চোখে পড়লো ওর ফোনের কার্ড হোল্ডারের অবস্থা শোচনীয়। যে জায়গায় চারটার বেশি কার্ড রাখা যাবে না, সেখানে ও রেখেছে আটটা! বললাম, কিছু কার্ড কমিয়ে ফেলো। না হলে আমও যাবে, ছালাও যাবে!

সামনের টেবিলে বুড়ো – বুড়ীর কথা কাটাকাটি চলছে। দেখে বললাম, “দেখো, তোমার দাম্পত্য জীবন কেমন যাবে”!
ও বললো, ” এমন কাউকে বিয়ে করবো যে আমার সম্পর্কে তেমন কিছু জানবেই না। ঝগড়ার প্রশ্ন আসছেই না”।
আজকের মেনুতে ছিলো – ক্রিসপি চিকেন র্যাপ্ট, স্ট্রব্যারি মাফিন আর যথারীতি ওর ফ্রেঞ্চ ভ্যানিলা উইথ এ্যাক্সপ্রেসো শট। আমি ফ্রেঞ্চ ভ্যানিলা, চকলেট মাফিন, চকলেট কুকিস।
খেতে বসে যখন কফিতে বিস্কুট ডুবিয়ে খাচ্ছি, তখন জিজ্ঞেস করলো, “তুমি কি মিষ্টি খেতে বেশি পছন্দ করো”?
আমি – কই? না তো! আজকের মেনুটাই এমন নিয়েছি। কি ভাবছো? গ্র্যাডুয়েশনের পর কোথায় যাবে?
হা – না, তেমন কিছুই ভাবিনি। ওয়ালমার্টের পর যে কোন কল সেন্টারে ট্রাই করবো। বাকি বিষয় নিয়ে কিছু ভাবছি না এখন, পি. আর (পারমানেন্ট রেসিডেন্সশিপ)। আমার তেমন কোন টেনশন নেই। আর তুমি কি ভাবছো?
আ – দেখি, কি হয়? একটা কিছু ব্যবস্হা হয়ে যাবেই! হ্যালিফ্যাক্সের দিকে চলে যাবো ভাবছি। আর এরপর? বিয়ে? বয়ফ্রেড? কেউ আছে?
হা – না, নেই! বাবা যা বলবেন, তাই করবো।
আ – মানে? তোমার বড় বোনের বিয়ে কি এভাবেই হয়েছে?
হা – না, ওর বয়ফ্রেন্ড আছে। বিয়ে এখনও হয়েছে কই? সাত বছর প্রেম করার পর ও প্রথমবারের মতো আমার জামাইবাবুর বাড়িতে গেলো সবার সাথে পরিচিত হতে। আর ওর অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর ছিলো না।
আ- কেন?
হা – দিদি ক্যাসুয়েল ড্রেসে চলে গিয়েছিল। ওর হবু শাশুড়ী জিজ্ঞেস করে বসলো, ” তুমি কি এভাবেই চলাফেরা করো?”
ওকে চাকরি থেকেই যেতে হয়েছিল, তাই সম্ভব হয়নি। কিন্তু ওনারা বিষয়টা ভালোভাবে নেননি। প্রথমে ওদের বিয়ে হয়ে যাক। তারপর বাবা নিশ্চয়ই আমার জন্য পাত্র দেখবেন। আমি সময় নেব বছর খানেক। তারপর বিয়ে হবে।
আ- আচ্ছা, বুঝলাম। মানে বাবার কথাই শেষ কথা। নিজের কোন পছন্দ নেই? তোমার পছন্দের ছেলেকে কি উনি মেনে নেবেন?
হা – হ্যাঁ, নেবেন। তবে উনি সবসময়ই একটা কথা বলেন,
“জীবনের প্রতি পদক্ষেপ নেওয়ার আগে অন্তত একবার আমার মাথার পাগড়ির কথা মনে রাখবে”! তাই ওনার কথার অবাধ্য হয়ে আমি কোন কাজ করতে পারবো না।
শিখ সম্প্রদায়ের পুরুষ অনুগামীরা নিজেদের পাগড়িকে জীবনের এক অাবশ্যিক অনুসঙ্গ করে আজীবন চলেন। একজন শিখকে চেনার উপায় হল – পাঁচটি “ক”- কেশ , কারা (ডানহাতে পরার বিশেষ বন্ধনী) , কৃপাণ (ছোট তরবারী), কাশেরা (বিশেষ ধরণের অন্তর্বাস ) এবং কঙ্গ (পাগড়ির সাথে থাকা চিরুনী)। শিখরা সাধারণত চুল কাটেন না। শুধু তাই নয়, তারা দাড়ি বা চুলের উপর কাঁচি চালান না এবং এটাকে তারা সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস বলে মনে করেন। পাগড়ী তাদের দীর্ঘ কেশরাশিকে ধুলাবালি থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেয়। প্রধানত তারা সাদা, কাল এবং নীল রংকে প্রাধান্য দেন। লাল রঙের পাগড়ী পড়া হয় শিখদের বিয়েতে। এখানে আসার পর আমার প্রথম রুমমেট ছিল জগদ্বিপ, ও মাথায় পাগড়ি পড়তে পাক্কা আধ ঘন্টা সময় নিতো। তা যা-ই হোক, পরীক্ষা হোক, পার্টি হোক আর ক্লাসেই যাওয়া হোক!! পাগড়ি পরায় ওর আনুগত্যতা ছিল সত্যিই মনে দাগ কাটার মতো একটি বিষয়!
এখন কফি বালিকার কথোপকথনে ফেরত আসি –

আমি – আর ধরো কেউ যদি তোমাকে ভালোবেসে ফেলে, তখন কি করবে?
হা- তাকে বুঝিয়ে বলবো কেন এটা সম্ভব না।
আমি – কিন্তু ওই ছেলে যদি তোমার প্রতি কমিটেড থাকে তাহলে কি হবে ?
হা – এক্ষেত্রেও ওকে ঠাণ্ডা মাথায় বুঝিয়ে বলতে হবে। আর কিছু করার নাই।
আ – মানে তোমার কাছে সত্যিকারের ভালবাসার কোন মূল্য নেই ?
হা – ও মা ! এমন আমি কখন বললাম? আছে, অবশ্যই আছে। আমি অবশ্যই তাকে মনে কষ্ট দিয়ে বা সে দুঃখ পাবে এমন কিছু কখনও করবো না। যদি সেই ব্যক্তি সত্যি আমাকে মনেপ্রাণে ভালোবেসে থাকে তাহলে আশা করি, সে আমার অবস্থাটা বুঝতে পারবে।
এরপর আরও অনেক বিষয় নিয়ে কথা হলেও ওর এই কথাগুলোই মনে গেথে রইলো।
পরের দিনে আমার ডিউটি পড়লো পেটস এ। মানে যে ডিপার্টমেন্টে গৃহপালিত পশু -পাখির খাবার এবং যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া যায়। আমি যথারীতি কাজে বাস্ত সময় পার করছি। দেখলাম আমার প্রফেসর ম্যালিসা কোন কাজে ওখানে এসে হাজির। হঠাৎ ম্যালিসাকে এত কাছ থেকে শপিং করতে দেখার অভিজ্ঞতা এই প্রথম! তাই কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওদিকে কোন জিনিস খুঁজতে এলো রুচি আর হারপ্রিত। আমাদের দুজনকে কথা বলতে দেখে ওরাও শেষ গল্পে যোগ দিল। বেশ জমে উঠলো আমাদের কথাবার্তা। তবে এভাবে ডিউটি করার সময় গল্প করাটা খুব একটা সমিচিন না। তাই ম্যালিসা অন্য কাজের কথা বলে চলে গেল। রুচি ও চলে যাচ্ছিল। ওদিকে কফি বালিকা আমার কাছে এসে বললো , “এসেছ কখন ? কিছু জানালে না যে ??” আমি বললাম , ব্যস্ত ছিলাম। তাই সময় পাইনি। ও চলে গেল তখনই কিন্তু মনে হচ্ছিল ওকে কিছু কথা বলার ছিল। যাক, কি আর করা? এই ভেবে যখন কাজে মন দিয়েছি তখনই ম্যাসেজ এসেছে – ” রেজিস্ট্রার নাম্বার ছয়ে আসো আর হাই বলে যাও!”
কিছু মুহূর্ত মনে অকারণে স্হায়ী হয়, এখন এমনই একটা মুহূর্তের কথাই বললাম। জীবনে কারও উপস্থিতির প্রত্যাশা ছিল তখন আর তাই হয়ে এসেছিল হারপ্রিত। ওর জীবনে আমার উপস্থিতিও তেমনই কিছু। এখনকার কঠিন বাস্তবতার সময়ে কারও কাছে বিশ্বাস অর্জন এবং তা রক্ষা করা দুটোই বেশ কঠিন কাজ। আবার এটাও ভাবা ঠিক নয় যার প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস, সে তার মূল্যায়ন সেভাবেই করবে। জীবন অনেক বিচিত্র ঘটনাচক্রের আবর্তে থাকার জায়গা আর প্রতি পরতেই জড়িয়ে আছে মায়ার রহস্যময়তা! কাজ থেকে ফিরে রাতে ক্লান্ত হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই রাজ্যের যত চিন্তা এসে ভিড় করছিল মনের জানালায়। আর ওটা খুলে দিতেই মনে হল প্রতিটা মুহূর্ত আমার সাথে খোশগল্পে মজে উঠেছে।
সাউথবার। উইটনিপিয়ারের এ জায়গা থেকে সিডনি পোর্ট আর নর্থ সিডনি পোর্ট দেখার দৃশ্য অসাধারণ। ছোট্ট এ শহরের আর কোন জায়গা থেকে দুই প্রান্তের দৃশ্য দেখা যায় কি না জানা নেই। এর পরেরবার আসলে হারপ্রিতকে অবশ্যই বলবো। আজকে কি ওর জব আছে?? ফোন দিয়েও ওকে পাওয়া গেল না। হয়তো ব্যস্ত। খুব একটা ভাবলাম না এ নিয়ে আর। সোজা চলে গেলাম সাউথবারে সূর্যাস্তের সময়টায়।
কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে ওকে ফোন করলাম কিন্তু ফোনে রিং বেজেই চললো। কেউ রিসিভ করছে না। কেন রিসিভ করছে না তা চিন্তা করতেই দেখি ওই ফোন দিয়েছে কিন্তু ফোনের কন্ঠস্বরটা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
ওপাশ থেকে বেশ দরাজ কন্ঠের এক পুরুষ বলে উঠলেন ” আই অ্যাম পুলিশ ইন্সপেক্টর রেইলি ম্যাকনিল। মে আই নো হু আর ইউ??”
সেকেন্ডের মধ্যেই আমার কাছে সম্পূর্ণ পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে গেল।
তারপরও যতটা সম্ভব নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, ” আই এ্যাম হারপ্রিতস ফেন্ড”
পুলিশ ইন্সপেক্টর – মে আই নো হাউ ডু ইউ নো হার??
আ – ও আমার ক্লাসমেট আর আমরা একসাথেই ওয়ালমার্টে কাজ করি।
পু – তুমি কি পুলিশ স্টেশনে আসতে পারবে? তোমার সাথে কথা ছিল।
আ- হ্যাঁ, অবশ্যই কিন্তু কি হয়েছে জানতে পারি??
পু – আজকে দুপুর তিনটে নাগাদ নর্থ সিডনি যাওয়ার পথে পোটল লেকের পাশে একটা গাড়ি দূর্ঘটনা ঘটেছে। সাদা রঙের হুনডাই কার অপর দিক আসা আরেকটা গাড়িকে সাইড দিতে গিয়ে খাদে পড়ে যায়।
আ- মানে?? ও এখন কোথায়??
পু – আমাকে দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে যে ওই গাড়ির কোন যাত্রীই জীবিত নেই!
আমি আর কোন কথা বলতে পারলাম না। শুধু স্যরি বলার পর দেখা করবো বলে ফোনটা রেখে দিলাম!
মূহুর্তের মধ্যেই সূর্যাস্তের লালাভ রেখাগুলো যেমন মিলিয়ে যেতে যেতে ক্রমশ চারিদিকে আঁধার ঘনিয়ে আসছিল তেমনি আমিও স্তব্ধ হয়ে গেলাম!! কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেললাম। মনে হল কন্ঠস্বর স্তব্ধ করে দেওয়া মূহুর্ত আমায় সবেগে গ্রাস করছে!
ওর কথাগুলো কানে ভেসে আসছিল, “ডানদিকের ওই গভীর খাদটা না আমার খুব ভয় করে। মনে হয় এই বুঝি পড়ে গেলাম!” বাঁ চোখের কোণে ক্রমশ জমতে থাকা লোনাজলের বিন্দু গড়িয়ে পড়লো !
কিছুই ভাবতে পারছিলাম না। গলা শুষ্ক হয়ে আসছে আর পানির পিপাসার তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে। আমাদের স্বপ্ল সময়ের বর্ণিল স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভেসে আসতে লাগলো। হারপ্রিতের সেই অমলিন হাসি আর কফিতে চুমুক দেওয়ার ফাঁকে কাপে রেখে লিপস্টিকের গাঢ় দাগ আরও প্রগাঢ় হতে লাগলো চোখের সামনে। কেন এমন হয়? কেন প্রিয় মানুষগুলো নিমিষেই হারিয়ে যায়?
“সময় তুমি বড় নিষ্ঠুর! আমার স্বপ্ল সময়ের সুখের নীড়ে হানা দিয়ে সব দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছো!!”
ভাবতে ভাবতে ঘামে ভিজে আসছে আমার টি শার্ট। আর তখনই মুঠোফোনটা আচমকা বেজে উঠলো!!
ওপাশ থেকে পরিচিত কন্ঠস্বর বললো, ” গুড মর্নিং, কোথায় আছে তুমি?” (আছোকে ওরা আছে ই বলে)
বললাম, “এইতো বাসায়, কি হয়েছে?”
“আমার শিফট আছে। এগারোটা থেকে। মুঝে ছোড় দো গে? (আমায় একটু নামিয়ে দিয়ে আসবে?)। ”
বললাম, “হ্যাঁ, ঠিক আছে! আসছি।”
ফোনটা রাখার পর দেখলাম আমার পুরো গেঞ্জি ঘামে ভিজে চুপসে গেছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্নানটা সেরে নিলেই ভালো হয়। ওদিকে কেউ অধির আগ্রহে আমার ড্রাইভের অপেক্ষায় আছে!
পড়ুন পূর্ববর্তী পর্ব: কফি বালিকা (পর্ব-০১)
তথ্যসূত্র: গল্পেসল্পে কিছুক্ষণ। লেখক: অতনু দাশ গুপ্ত। ঢাকা, সাফল্য প্রকাশনী, ২০২২।
Pingback: কফি বালিকা (পর্ব-০১) – সাফল্য প্রকাশনী